তিলের তেল
তিল এবং তিলের তেল খাদ্য হিসাবে সর্বাধিক জনপ্রিয় । এটি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিলের তেল মূলত একটি এডিবল ভেজিটেবল অয়েল। রান্নায় এর ব্যবহার সচেয়ে বেশি হয়ে থাকে, তবে, সৌন্দর্য চর্চাতেও কিন্তু এর বেশ খ্যাতি রয়েছে।
তিলের তেলে বেশ কিছু অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিন রয়েছে যেমন- ভিটামিন ই, বি কমপ্লেক্স ও ডি সমৃদ্ধ। পাশাপাশি এই তেলে আছে কপার, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। এছাড়াও তিলের তেলে রয়েছে ফ্যাটি এসিড। এর মধ্যে ৪১% লিনোলিক এসিড, ৩৯% অলিক এসিড, ৮% পালমিটিক এসিড এবং ৫% স্টেরিক এসিড আছে। চুলের যত্নে নানা ধরনের তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসব তেলের মধ্যে তিলের তেল অন্যতম। তিল থেকে তৈরি এই তেল প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এতে রয়েছে ভিটামিন ই, বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, রিবোফ্লাবিন, থিয়ামিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, নিয়াসিন, ফলিক অ্যাসিড, লোহা, সেলেনিয়াম, জিংক ও প্রোটিন যা চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায় ও চুলকে ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও তিলের তেলে রয়েছে নানান উপকারিতা
স্বাস্থ্যরক্ষায় তিলের তেল
১. অকালে চুল পেকে যাওয়া রোধ করে, নিয়মিত মাথার স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করতে হবে।
২. আথ্রাইটিস পেইন-এর ক্ষেত্রে এই তেল খাবার তেল হিসেবে ব্যবহার এবং মালিশ দুটোই করলে উপকার পাবেন।
৩. রান্নায় এই তেলের ব্যবহার ব্লাড প্রেশার কমায়।
৪. ডায়েটে এই তেলের ব্যবহার স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন কমায়।
৫. রান্নায় তিলের তেলের ব্যবহার ইনসুলিন এবং গ্লুকোজ লেভেল ঠিক রাখে বলে ডায়াবেটিস-এর রোগীরা এটাকে নিয়মিত খাবারের তেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
৬. উকুন দূর করতে অনেকেই বিশেষ সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করেন যেগুলো উকুন দূর করার পাশাপাশি চুলকে ফ্রি-ভাবে রুক্ষ করে দেয়। ঘরোয়া রেমেডি হিসেবে, প্রয়োজন অনুযায়ী তিলের তেলের মধ্যে নিম পাতা নিয়ে, একটু মাইক্রোওভেন এ গরম করে স্ক্যাল্প এ লাগান। পুরো চুলে ভালো করে লাগাতে হবে নইলে উকুন দূর হবে না। দু ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে উকুন দূর হবে প্লাস চুলে শাইন আসবে।
৭. চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে বা কোনো রকম ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে থাকলে রোজ রাতে তিলের তেল মাথায় দিয়ে সকালে শ্যাম্পু করবেন। তেলটা কীভাবে বানাবেন? ছোটো এক কাপ তিলের তেল নিয়ে তাতে এক চা চামচ মেথি নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন, এরপর সেটা চুলে লাগাতে হবে। আশা করি দ্রুতই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
৮. নানারকম স্টাইলিং-এর কারণে চুল ড্যামেজ হয়ে থাকলে, একটা পাকা অ্যাভোকাডো ম্যাশ করে নিয়ে তাতে মেশান ৫ চামচ তিলের তেল (চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী এই পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন)। এবার পুরো চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু’বার করলে ভালো উপকার পাবেন।
৯. এই তেল একটি অসাধারণ ময়েশচারাইজার। পাশাপাশি এতে ডিটক্সিফাইং উপাদান থাকায় শুষ্ক ডেড সেল দূর করে ত্বককে সফট ও হাইড্রেটেড করে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে দু ফোঁটা তিলের তেল যেকোনো ক্রিমের সাথে মিশিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করবেন। চাইলে এই তেল আপনি আপনার পছন্দের ফেইস প্যাকেও লাগাতে পারেন, তবে খুব বেশি না, দুই থেকে তিন ফোঁটা পরিমাণে।
১০. অনেকের বয়স ত্রিশ ছুঁতে না ছুঁতেই চুল সাদা হওয়া শুরু করে দেয়। এই সমস্যা থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে তিলের তেল। নিয়মিত তিলের তেল মাথার স্ক্যাল্প-এ ম্যাসাজ করুন। তিলের তেল একটু ভারী বলে পুরো চুলে লাগাতে হলে অন্য কোন হালকা তেল যেমন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে লাগাবেন। অকালে পেকে যাওয়া রোধের পাশাপাশি এটি চুলের রংকেও ডার্ক করে তোলে আস্তে আস্তে।